An untold Story
জন্ম ২৯শে জুলাই ১৯৯৫ সাল, মাদারীপুর। লেখাপড়া শুরু করেছিলাম ২০০২ সালে। শুরুটা খামখেয়ালীভাবে interesting-এর মধ্যে দিয়ে হয়েছিল। ক্লাশে সমবয়সীদের সাথে ভালোই মিলে গিয়েছিলাম। সহপাঠীদের সাথে দিনগুলো ভালোই চলছিল। এরপর হঠাৎ প্রথম সাময়িক পরীক্ষা হল। রেসাল্ট দেখে তো আমার চোখ ছানাবাড়া। সব বিষয়ে ১০০ পাওয়া সত্ত্বেও সিরিয়ালে প্রথম! সংখ্যার এই অপ্রতুলতা দিয়ে মেধাক্রম আমি মেনে নিতে পারলাম না। যাই হোক এরকম চলছিল ক্লাশ থ্রি পর্যন্ত। কিন্তু এরপর জীবনের গতিটা পাল্টে গেল। আব্বু সিদ্ধান্ত নিলেন আমি এবং আমার বড় ভাই (প্রায় দু’বছরের বড় এবং দু’ক্লাশ সিনিয়র)-কে একসাথে করে দিবেন। উদ্দেশ্য যাইহোক processing শুরু হয়ে গেল। এক্ষেত্রে down-grade অথবা Up+down-grade (equal) পদ্ধতি বাদ দিয়ে over-grade পদ্ধতি গ্রহণ করা হল।
২০০৫ সাল! প্রথমে আমাকে ক্লাশ four বাদ দিয়ে five-এ উন্নীত করা হলো। এখানেও পর্যায়ক্রমে বৃত্তিসহ সব test-এ আমার ধারাবাহিকতা রক্ষা করলাম।
২০০৬ সাল! নতুন বন্ধুদের সাথে খাপ খাওয়াতে না খাওয়াতে আবার ক্লাশ six বাদ দিয়ে seven-এ উন্নীত করা হলো। এবার আব্বুর লক্ষ্য পূর্ণ হলো। বঞ্চিত হলাম আমার মন থেকে গড়া ঘনিষ্ট বন্ধুদের সাথে বন্ধুত্বতা থেকে। আমি চাইলেও ওদের সাথে মিশতে পারলাম না। ওরাও কেমন যেন এক লজ্জাবোধে আমাকে ধরা দিত না। এভাবে আস্তে আস্তে ওদের থেকে পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হলাম। এখনও আমি আমার হৃদয়ের সেই বন্ধুদের খুজি। কিন্তু তা কি আর সম্ভব? আজও তাদের কথা মনে হলে বুকটা নেড়ে ওঠে। মুখ খুলে তুই বলা বন্ধুদের না পেয়ে চোখ আজও অজান্তে ঝরঝর করে অশ্রু ফেলে! আজও আমি কোনো মনের কথা বলা বন্ধু খুজে পাই নি।
নতুন করে আবার কমপক্ষে সর্বনিম্ন দুবছরের বড় ভাইদের সাথে পথচলতে শুরু করলাম। ইতোমধ্যে position-টা ধরে রাখা নেশা হয়ে দাড়িয়েছে। five-এর সিলোবাস-এর ধরন four থেকে বেশী diverse না হওয়ার কারনে আমাকে বেশী বাধ সাধতে হলো না। কিন্তু class seven! শুরু হলো গতিময় এক জীবনের সাথে যুদ্ধ। এবার আমরা দু’ভাই। ও এবার এক অন্যরকম গতি ফিরে পেল। কিন্তু আমার খুবই কষ্ট হচ্ছিল। যাইহোক আমি পর্যায়ক্রমে আমার আগের ধাপে চলে আসলাম। এরপর Class eight-এর বৃত্তিতে জেলার মধ্যে চতুর্থ এবং দাখিল-আলিম GA+ পেয়ে শেষ করলাম আমাদের উচ্চ মাধ্যমিকের স্তর।
আমরা দু’জনে খুবই ভালো বন্ধু ছিলাম। অবস্থা এমন ছিল যে, কোনো কাজই একজনে একা করতে ভরসা পেতাম না। ঝগড়া-ঝাটি, মারামারি, পড়ালেখা, বাজার-ঘাট সবকিছুতেই আমরা ‘আমি’র মত ছিলাম। যদিও লেখাপড়ায় contest ছিল, আমি সবকিছুই সরল মনে ওর সাথে শেয়ার করতাম। জানি না ও কি করত। ফাষ্ট-সেকেন্ড বয়দের মধ্যে সার্বজনীন নীরব শক্রতা থাকলেও প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বিশাল ব্যবধান এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ভাই-বন্ধু হওয়ার কারনে আমার মধ্যে ওরকম feeling কখনো ছিল না এবং আজো কাজ করে না। লেখাপড়ার জগতে আমরা (আমার কারনে ওও) ক্লাশে অন্যদের বিশেষ করে ৩-১০দের হিংসা (রোষানল)র শিকার হলেও আমাদের কেউ দমাতে পারে নাই। যাকে পরোয়া করতাম তিনিই আমাদের বাঁচিয়েছেন, বাঁচান এবং বাঁচাবেন এবং আমরা তাঁরই ওপর ভরসা করি এবং এগুলো তারই নজরানায় ব্যক্ত করি, আত্ম গরিমায় নয়।
এরপর আসলাম জীবনের আসল মোড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গিয়ে অজানা দুর্ভাগ্যে আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম। জানি দুনিয়ার নিয়মে কারনটা কজনই বা গুণবে! তাছাড়া আমার অসুস্থতা বললে আমি নিজেই নিজের কাছে তিরস্কৃত হই। মনে হয় এটা পরাজিতের ব্যর্থতা ঢাকার ব্যর্থ প্রয়াস।
যাইহোক আমি পারিবারিক প্রীতে এখানে ভর্তি হয়ে গেলাম। এখানে আরো এক ব্যাচ সিনিয়র ভাইদের সাথে চলতে হল। অনেক খোজাখুজি করেও নিজের মত কাউকে পাই নি। অবশেষে ওনাদের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে লাগলাম। এরপর একবছর চলে গেল। নতুন ব্যাচ আসল। চলিত নিয়মে ওনারা জুনিয়র হয়ে গেলেন। এরপর আবার আরেক ব্যাচ! এরাও চলিত নিয়মে জুনিয়র হয়ে গেল। কবে যে ঘটল, কিভাবে ঘটলো আমি কিছু আঁচ করতে পারি না। হিসাবটাও গুলিয়ে ফেলেছি। মনে হয় এটাই আমার ব্যাচ। জানি না আমার সেই বন্ধুদের কি অবস্থা। প্রতিদিন ক্লাশ transition-এ আমাদের সাথে ওদের (নতুন ব্যাচ) দেখা হয়। বড় ভাই হিসেবে যেরকম করা দরকার ওরা তেমনটাই করে। কিন্তু আমি ওদের চোখের দিকে তাকাতে পারি না। শুধু মুখ বুঝে সালামের জবাব দিই। জানি না কেন? কেমন যেন এক অজানা ক্ষোভ, ভালোবাসা কাজ করে। কেউ ওদেরকে কিছু বলতে গেলে (ragging) আমি বাধা দেই। আমি এখনও আমার আব্বুকে দোষারোপ করি। তিনি সান্ত্বনা দেয়া ছাড়া আর কোনো ভাষা খুজে পান না।
অনেক কম্পিউটার, মোবাইলে কোনো সমস্যা হলেই শত শতবার restore দিয়েছি। কিন্তু আমার জীবনের restore মারতে পারলাম না। আমি আবার সেই rhythm থেকে শুরু করতে চাই। হে প্রভু! তুমি যদি কোনো সময় এই offer দেও তাহলে আমাকে আগে দিও।
ছোটকালে শুনতাম পুরান চাল ভাতে বাড়ে। আমার এটা মানতে কষ্ট হত। আজ আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি। সব পরাজয়ে আমার অভিজ্ঞতার অভাব ছিল। আজও আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে। আর পারছি না (এক পাহাড়সম syllabus, সাথে career developing লেখাপড়ার সাথে) । জানি না কতদূর যেতে পারব। ও থাকলে হয়ত চাপটা কমতো। শরীরটাও দিন দিন ভালো যাচ্ছে না। সকলের কাছে দু’আ দরখাস্ত। সেই মহান প্রভুর কাছে আমা হয়ে সুপারিশ করবেন যেন rhythm মিলাতে পারি।
১৯-০৩-২০১৫ইং
গোপালগঞ্জ।
গোপালগঞ্জ।

No comments:
Post a Comment